বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম - ২০২৪

ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়মবর্তমান সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তবে বাংলাদেশে যে সকল মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানি রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানি হল বিকাশ। বিকাশ বাংলাদেশের মানুষের কাছে অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। প্রতিদিন বিকাশের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা লেনদেন হয়। এমন কি বিদেশ থেকেও প্রবাসীরা তাদের জন্মভূমিতে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে থাকে। 
বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম - ২০২৪
তবে বিকাশ দিয়ে টাকা লেনদেন করার জন্য বিকাশ একাউন্ট খুলতে হবে। আমাদের মধ্যে অনেকে রয়েছে যারা বিকাশ একাউন্ট খুলতে জানে না। আপনারা যারা বিকাশ একাউন্ট খুলতে জানেন না তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাহলে চলুন আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু করা যাক,

বিকাশ একাউন্ট চেক

বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে যে সকল মানুষ মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা লেনদেন করে থাকে, তাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই বিকাশের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করে থাকে। তবে বিকাশের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করার জন্য তাদের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। আমাদের মধ্যে অনেকেরই বিকাশ একাউন্ট থাকলেও আমরা বিকাশ একাউন্ট চেক করতে জানিনা। 

আবার অনেকে রয়েছে যারা বিকাশের ব্যালেন্স চেক করতে জানে না। আপনাদের মধ্যে যারা বিকাশ একাউন্ট চেক অর্থাৎ বিকাশ একাউন্টের ব্যালেন্স সহ কোডের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট চেক করতে জানেন না তাদের জন্য নিচে বিকাশ একাউন্ট চেকের সকল উপায় তুলে ধরা হলোঃ

কোডের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট এর ব্যালেন্স চেকঃ আমাদের মধ্যে অনেকেই বিকাশ একাউন্টে কত টাকা আছে তা দেখতে জানে না। তবে খুব সহজেই কোডের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্টের ব্যালেন্স চেক করা যায়। সে ক্ষেত্রে মোবাইলের ডায়াল অপশনে গিয়ে *২৪৭# কোড ডায়াল করতে হবে। এরপর মাই বিকাশ অপশনের নাম্বার ডায়াল করতে হবে। তারপর বিকাশ একাউন্টের পিন দিয়ে বিকাশের ব্যালেন্স দেখা যাবে। যাদের বাটন মোবাইল রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতিটা খুব কাজে লাগে।

বিকাশ অ্যাপস দিয়ে ব্যালেন্স চেকঃ যাদের স্মার্টফোন রয়েছে তারা খুব সহজে বিকাশ অ্যাপ দিয়ে বিকাশের ব্যালেন্স চেক করতে পারবে। সে ক্ষেত্রে প্লে স্টোর থেকে বিকাশ অ্যাপসটি ডাউনলোড করতে হবে। তারপর আপনার বিকাশ একাউন্টের নাম্বার এবং পিন দিয়ে বিকাশ একাউন্টটি লগইন করতে হবে। এরপর উপরের দিকে ব্যালেন্স অপশনে ক্লিক করলেই আপনার ব্যালেন্স দেখতে পাবেন।

বিকাশ একাউন্ট দেখার কোডঃ কোডের মাধ্যমে নিজের বিকাশ একাউন্ট খুব সহজে চেক করা যায়। সে ক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে মোবাইলের ডায়াল অপশনে প্রবেশ করতে হবে। তারপর বিকাশ একাউন্ট চেক কোড *২৪৭# ডায়াল করতে হবে। তাহলে আপনার সামনে বিভিন্ন অপশন সহ একটি লিস্ট ওপেন হবে। তারপর ডায়াল অপশনে ৯ লিখে সেন্ড করলে আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টটি ওপেন হবে। এরপর সেখান থেকে আপনি আপনার বিকাশের ব্যালেন্স চেক, পিন পরিবর্তন সহ বিভিন্ন কাজ করতে পারবেন।

বাটন ফোনে বিকাশে টাকা দেখার নিয়ম

আমাদের মাঝে অনেকেই রয়েছে যাদের স্মার্টফোন নেই। তারা বাটন ফোন ব্যবহার করে থাকে। আবার অনেকে রয়েছে যাদের স্মার্টফোন এবং বাটন ফোন দুইটাই রয়েছে। তবে অনেকে বাটন ফোনে বিকাশের টাকা দেখতে চায় কিন্তু বাটন ফোনের বিকাশে টাকা দেখার নিয়ম জানেনা। আবার অনেক ক্ষেত্রে স্মার্টফোন আমাদের কাছে থাকে না ফলে বাটন মোবাইলে বিকাশের টাকা দেখার প্রয়োজন হয়। আপনারা যারা বাটন ফোনে বিকাশে টাকা দেখার নিয়ম জানেন না এবং নিয়ম জানতে চাচ্ছেন তাদের জন্য নিচে বাটন ফোনে বিকাশে টাকা দেখার নিয়ম দেওয়া হলঃ
  • প্রথমেই আপনাকে বাটন ফোনে এই কোড *২৪৭# ডায়াল করতে হবে।
  • এরপর আপনার সামনে একটি লম্বা লিস্ট আসবে। এই লিস্টে মাই বিকাশ যত নাম্বার অপশনে আছে সেই নাম্বার ডায়াল করতে হবে।
  • তারপর আপনারা দেখতে পাবেন চেক ব্যালেন্স নামক অপশনটি এক নাম্বারে রয়েছে। তাই ডায়াল অপশনে ১ তুলে সেন্ড করতে হবে।
  • এরপর আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন নাম্বার তুলে সেন্ড করতে হবে।
  • তাহলে আপনাদের সামনে একটি মেসেজ আসবে যেখানে আপনার বিকাশ একাউন্টের টাকার পরিমান লেখা থাকবে। এভাবে খুব সহজেই বাটন মোবাইল দিয়ে বিকাশ একাউন্টের টাকা দেখা যায়।

জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম

বর্তমানে আমাদের সকলেরই টাকা লেনদেন করার প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম। বিকাশ বাংলাদেশের অন্যতম একটি মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম। তবে আমরা অনেকেই জানি বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রয়োজন হয়। 

কিন্তু অনেক যুবক ছেলে মেয়ে রয়েছে যাদের এখনো জাতীয় পরিচয় পত্র হয়নি এবং বিকাশ একাউন্ট খোলা প্রয়োজন। যাদের জাতীয় পরিচয় পত্র হয়নি তাদের ক্ষেত্রে খুব সহজে জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়। কিভাবে জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলা যায় তা ধাপ আকারে নিচে তুলে ধরা হলোঃ
  • সর্বপ্রথম আমাদের মোবাইলে বিকাশ ওয়েবসাইট অথবা বিকাশ অ্যাপসটি ডাউনলোড করতে হবে।
  • এরপর বিকাশ অ্যাপসে প্রবেশ করলে একটি ফরম পূরণ করতে হবে। এতে আপনার নাম, জন্ম নিবন্ধন নাম্বার, জন্মতারিখ, স্থায়ী ঠিকানা এবং দুটি মোবাইল ফোন নাম্বার প্রদান করতে হবে।
  • আবেদন জমা হওয়ার পর জন্ম নিবন্ধন সনদের কপি এবং আপনার ছবি যাচাই করা হবে।
  • এরপর আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন দিয়ে ভেরিফিকেশন করলে আপনার বিকাশ একাউন্ট চালু করতে সক্ষম হবে।

বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম

আমরা সকলেই জানি বিকাশ বাংলাদেশের অন্যতম একটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। ব্যক্তিগত অথবা ব্যবসায়ী লেনদেনের কারণে আমাদের সকলেরই ব্যাপকভাবে বিকাশ ব্যবহার করতে হয়। বিকাশের মাধ্যমে খুব সহজেই আমরা দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত এবং এক দেশ থেকে আরেক দেশে টাকা ট্রান্সফার করতে পারি। এছাড়াও বিকাশের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল, এডুকেশন ফি, গ্যাস বিল, পানি বিল ইত্যাদি খুব সহজেই পরিশোধ করা যায়।

তবে এ সকল সুবিধা পাওয়ার আগে আমাদের বিকাশ একাউন্ট খুলতে হবে। আমার অনেকেই বিকাশ
একাউন্ট খোলার নিয়ম জানি না যার কারণে আমাদের অনেক বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। তবে আপনারা যারা বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে চাচ্ছেন তাদের জন্য নিচে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম তুলে ধরা হলোঃ
  • সর্বপ্রথম গুগল প্লে স্টোর থেকে আপনাদের বিকাশ অ্যাপসটি ইন্সটল করতে হবে।
  • এরপর আপনার মোবাইল নাম্বার লিখতে হবে এবং পরবর্তী ক্লিক করতে হবে।
  • আপনার বিকাশ একাউন্টে নিরাপত্তার জন্য একটি পিন সেট করতে হবে এবং তা নিশ্চিত করুন বোতামে ক্লিক করতে হবে।
  • আপনার এনআইডি নাম্বার, জন্ম নিবন্ধন এবং লিঙ্গ লিখতে হবে।
  • সকল তথ্য দেওয়ার পর নিশ্চিত করুন বোতামে ক্লিক করতে হবে।
  • এরপর আপনি যে নাম্বারে একাউন্ট তৈরি করেছেন সেই নাম্বারে একটি ওটিপি কোড পাঠানো হবে।
  • এই কোডটি ডায়াল অপশনে বসিয়ে নিশ্চিত করুন বোতামে ক্লিক করতে হবে।
  • এরপর আপনাকে আপনার বিকাশ একাউন্ট সচ্ছল করার জন্য পার্শ্ববর্তী বিকাশ এজেন্ট এর কাছে যেতে হবে। বিকাশ এজেন্টকে আপনার এন আই ডি কার্ড এবং বিকাশ অ্যাপস দেখাতে হবে।
  • এরপর বিকাশ এজেন্ট আপনার একাউন্ট সক্রিয় করে দিবে এবং আপনার বিকাশ একাউন্ট লেনদেনের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে।

বিদেশ থেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম

আমাদের দেশের অসংখ্য মানুষ প্রবাসে কর্মরত রয়েছে। এমনকি প্রতিনিয়ত অনেক মানুষ বিদেশে কাজের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছে। যার ফলে দিন দিন রেমিটেন্সের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকল প্রবাসী তাদের উপার্জনের টাকা তাদের প্রিয়জনদের কাছে পাঠিয়ে দিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে আগে ব্যাংকিং সিস্টেম ব্যতীত অন্য কোন পথ না থাকলেও বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম বিকাশের মাধ্যমে খুব সহজে টাকা বিদেশ থেকে পাঠানো যায়। বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন ৬৫ টি দেশ থেকে সরাসরি বিকাশে টাকা পাঠানো যায়। 

আমাদের দেশের যে সকল ভাইয়েরা প্রবাসী কর্মরত রয়েছে, তারা তাদের উপার্জনের টাকা খুব সহজেই সরাসরি নগদের মাধ্যমে প্রিয়জনদের কাছে পাঠাতে পারে। এছাড়াও একাধিক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিদেশ থেকে জন্মভূমিতে টাকা পাঠাতে চাইলে অনেক চার্জ প্রদান করতে হয়। কিন্তু বিকাশে অল্প চার্জে সরাসরি বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো যায়। আপনাদের মধ্যে অনেকেই বিদেশ থেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম জানতে চাচ্ছেন। আপনারা যারা বিদেশ থেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম জানতে চাচ্ছেন তাদের জন্য নিচে এই নিয়ম তুলে ধরা হলোঃ
  • প্রথমে আপনাকে অনুমোদিত এবং পার্টনার ব্যাংক/এমটিও এজেন্ট/ মানি এক্সচেঞ্জ এজেন্টের কাছে যান।
  • আপনি যে বিকাশ একাউন্টে টাকা পাঠাতে চাচ্ছেন তার নাম্বার প্রদান করুন।
  • প্রয়োজনে পরিমাণ টাকা প্রদান করার পর ব্যাংক/এমপিও এজেন্ট/মানি এক্সচেঞ্জ ইত্যাদি এজেন্ট কে কাজটি শুরু করতে এবং সম্পূর্ণ করতে অনুরোধ করুন।

বিদেশ থেকে বিকাশে টাকা আসতে কতদিন সময় লাগে

আমাদের মধ্যে অনেকেই বিদেশ থেকে বিকাশে টাকা পাঠাতে চাচ্ছেন। কিন্তু আপনারা জানেন না বিদেশ থেকে বিকাশে টাকা আসতে কত দিন সময় লেগে থাকে। আপনারা যারা এই প্রশ্নের উত্তর জানেন না এবং জানতে চাচ্ছেন তাদেরকে জানিয়ে রাখি যে, বিদেশ থেকে বিকাশে টাকা আসতে সাধারণত ৫ মিনিট সময় লেগে থাকে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ৫ মিনিট থেকে ২৪ ঘন্টা সময় লাগে। আবার অনেক সময় ছোটখাটো সমস্যার কারণে এই সময় আরো দীর্ঘ হতে পারে।

শেষ কথা

বর্তমান যুগ আধুনিক এবং প্রযুক্তির যুগ। এ যুগে বিকাশের মতো মোবাইল ব্যাংকিং সেবা গুলো মানুষের টাকা লেনদেন কে অনেক সহজ করে তুলেছে। তবে বিকাশে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে অনেক সময় আমাদের নাম্বার ভুল হয়। যার ফলে টাকা অপরিচিত মানুষের কাছে চলে যায় এবং তা ফেরত পাওয়া অনেক কঠিন হয়। তাই আমাদের সকলেরই উচিত নাম্বার সঠিকভাবে তুলে কয়েকবার চেক করে টাকা লেনদেন করা। 

প্রিয় পাঠকগণ, আজকেরে আর্টিকেলে আমরা বিকাশ একাউন্ট সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন। দেখা হবে পরবর্তী কোনো টপিক নিয়ে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিমসসেফ আইটিির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url