হার্টের সমস্যার লক্ষণ ও প্রতিকার বর্তমানে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অত্যন্ত ভয়াবহ একটি সমস্যা। প্রায় কম বেশি অনেকের মাঝেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার লক্ষ্য করা যায়। গ্যাস্ট্রিক দূর করার জন্য মেডিসিন নেওয়ার প্রয়োজন হয়। যা অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এই ক্ষতি এড়াতে প্রাকৃতিক উপায় এর মাধ্যমে গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই সবাইকে গ্যাস্টিকের বিষয়ে অবগত থাকতে হবে। এবং গ্যাস্ট্রিক সৃষ্টিকারী সকল খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তাই গ্যাস্ট্রিক বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।
গ্যাস্ট্রিক কত প্রকার
গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিটিক প্রায় প্রতিটি মানুষের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়। গ্যাস্ট্রিক হয় মূলত অনিয়মিত জীবন যাপন এবং বিভিন্ন অস্বাস্থ্যকর খাদ্যর ফলে। তাই আমাদের সকলকে নিয়মিত জীবন যাপনের পাশাপাশি খাদ্যের প্রতি যথেষ্ট সচেতন থাকতে হবে। কারণ গ্যাস্ট্রিকের ফলে আমাদের মৃত্যু ও হতে পারে। এজন্য প্রত্যেককেই গ্যাস্টিকের কারণ এবং লক্ষণ সম্পর্কে জানা আবশ্যক।
আমরা সবাই মনে করি, গ্যাস এবং গ্যাস্ট্রিক হওয়া একই সমস্যা। আসলে কিন্তু গ্যাস এবং গ্যাস্ট্রিক এক সমস্যা না এবং চিকিৎসাও এক না। তাই সবারই উচিত এই সম্পর্কে ধারণা থাকা। তাহলে চলুন গ্যাস্টিক কত প্রকার জেনে নেওয়া যাক,
গ্যাস্ট্রিক সাধারণত দুই প্রকার তা হলঃ
গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসারঃ পাকস্থলীর এর মধ্যে যে আলসার সৃষ্টি হয় তাকে আমরা গ্যাস্ট্রিক বা পেট্রিক আলসার বলি।
ডিওডেনাল আলসারঃ পাকস্থলীর পরের অংশ হল স্মল ইন্সটেসটাইন এর প্রথমের অংশ হলো ডিওডেনাল এখানে আলসার তৈরি হলে তাকে আমরা ডিওডেনাল আলসার বলি।
গ্যাস্ট্রিক হলে কি কি সমস্যা হয়
গ্যাস্টিক হলে কি কি সমস্যা হয় তা নীচে আপনাদের জন্য তুলে ধরা হলো। গ্যাস্টিক হলে সাধারণত-
- পেট ব্যথা পেট ফুলে যাওয়া।
- পেট ভারী লাগা।
- পেটে বুদ বুদ শব্দ।
- বদহজম।
- বুকে ব্যথা ও জ্বালা পোড়া।
- ক্ষুধামন্দ।
- বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
- ঢেকুর তোলা।
- অসুস্থ বোধ করা বা অসুস্থ লাগা।
- পাতলা পায়খানা হতেও পারে নাও পারে।
সাধারণত ইমিডিয়েট গ্যাস্ট্রিক ২ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত থাকে কিন্তু ক্রনিক গ্যাস্ট্রিক প্রায় সারা বছর থাকে।
গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কোথায় কোথায় হয়
গ্যাস্ট্রিক সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় মেডিসিন অধ্যাপক ডাক্তার এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, যারা নিয়মিত খাবার গ্রহণ করেন না কিংবা দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকে তাদের মাঝেই পেপটিক পালসার বা গ্যাস্টিক আলসার দেখা দিতে পারে। চলুন এবার জেনে নেই, গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কোথায় কোথায় হয়।
- সারাদিন পেটের উপরের দিকে অল্প অল্প ব্যথা থেকে হঠাৎ তীব্র ব্যথা শুরু হয়ে যায়।
- বুক জ্বালা করে,বুকে ব্যাথা হতে পারে।
- পেট জ্বালাপোড়া করে।
গ্যাস্ট্রিক এর লক্ষণ
আমাদের জীবন যাপনে প্রায় প্রতিটি মানুষের মাঝে গ্যাস্টিকের সমস্যা দেখা যায়। এজন্য গ্যাস্ট্রিক বিষয়ে কমবেশি সবারই জানা উচিত। চলুন এবার বিস্তারিত জেনে নেই।
গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণঃ
- পেট ব্যথা পেট ফুলে যাওয়া।
- পেট ভারী লাগা।
- পেটে বুদ বুদ শব্দ।
- বদহজম।
- বুকে ব্যথা ও জ্বালা পোড়া।
- ক্ষুধামন্দ।
- বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
- ঢেকুর তোলা।
- অসুস্থ বোধ করা বা অসুস্থ লাগা।
- পাতলা পায়খানা হতেও পারে নাও পারে।
গ্যাস্ট্রিক বুকে ব্যাথা দূর করার উপায়
গ্যাস্ট্রিক দূর করার প্রাকৃতিক উপায় হলঃ
গ্যাস্ট্রিক নাই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রায় প্রতিটা মানুষেরই কোন না কোন সময় গ্যাস্টিকের সমস্যার সম্মুখীন হয়। আর গ্যাস্ট্রিকের যে যন্ত্রণা ও অস্বস্তি এবং বুকে ব্যথা হয় যার হয় সে একমাত্র বোঝে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার পরিত্রাণ পেতে সবাই গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের উপর নির্ভরশীল। দেখা যায় গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ যে পরিমাণ বিক্রি হয় তা অন্য সব ওষুধ মিলেও হয় না।
আমরা যদি গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের দিকে না ঝুঁকে প্রাকৃতিক উপায়ে মনোযোগ দেই এবং কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলি তাহলে অতিরিক্ত অপচয়ও হয় না আবার ও গ্যাস্ট্রিক হয় না। চলুন এবার জেনে নেই, গ্যাস্ট্রিক দূর করার প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কে।
পানি পান করাঃ প্রচুর পানি পান করলে গ্যাসের সমস্যা দূর হয়। যার ফলে গ্যাস্টিকের সমস্যা কমানোর পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি দেয়। একজন মানুষের নিয়মিত প্রতিদিন ৬ লিটার পানি পান করতে হবে।
শসাঃ শসা খেলে পেট অনেক ঠান্ডা থাকে। শসাতে রয়েছে ফ্লেভানয়েড ও আন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা পেটে গ্যাসের মাত্রা কমায় যা গ্যাস্ট্রিক না হওয়াতে সাহায্য করে।
লেবুঃ গ্যাস্ট্রিক দূর করতে লেবু ভালো করে চিপে পানিতে মিশিয়ে খেলে বা লেবু চা পান করলে অনেক ভালো ফল পাওয়া যায়।
পুদিনা পাতাঃ গ্যাসের সমস্যা দূর করার জন্য পুদিনা পাতা অনেক কার্যকরী। যদি এক কাপ পানিতে পাঁচটি পুদিনা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে খান তাহলে পেট ফাঁপা বমি ভাব দূর হবে।
আদাঃ আদা যদি কুচি করে লবণ দিয়ে খান অথবা চায়ের সাথে আদা দিয়ে খেতে পারেন আরো ভালো ফলাফল পেতে মধুর সাথে লেবু মিশিয়ে নিতে। হবে এতে গ্যাসের সমস্যা দূর করার পাশাপাশি বদহজম দূর করতে সাহায্য করে।
দারুচিনিঃ দারুচিনি কুসুম গরম পানির সাথে খেতে পারেন অথবা চায়ের সাথে মিশিয়ে খেতে পারে। গ্যাসের সমস্যা দূর করার পাশাপাশি পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
দইঃ আমরা কম বেশি সকলেই জানি দই খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। হলে খুব তাড়াতাড়ি খাবার হজম হয়। এতে পেটে গ্যাস হওয়ার প্রবণতা কমে আসে।
ডাবের পানিঃ প্রতিদিন আমাদের ডাবের পানি খাওয়া উচিত। কারণ ডাবের পানি খেলে হজমে সহায়তা করে এবং খুব সহজে সব খাবার হজম হয়। তাই নিয়মিত ডাবের পানি খেলে গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় গ্যাস্ট্রিকও হবে না।
ব্যায়ামঃ প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর ভালো থাকে যা আমরা সবাই জানি। কিন্তু গ্যাস্ট্রিক থেকেও যে মুক্তি পাওয়া যায় বা গ্যাস্টিক হয় না তা আমরা অনেকেই জানিনা। নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে শরীরের প্রতিটা অঙ্গ পতঙ্গ কাজ করে ফলে খাবার হজমের সহায়তা করে। তাই খাবারের পর নিয়মিত হাটার অভ্যাস করুন।
গ্যাস্ট্রিক রোগীর খাবার তালিকা
গ্যাস্ট্রিক রোগীদের সতর্কতার সাথে থাকতে হবে। বিশেষ করে খাবারের দিকে নজর দিতে হবে। যেসব খাবার খেলে গ্যাস্টিকের মাত্রা বেড়ে যায় সেসব খাবার খাওয়া থেকে একদম বিরত থাকতে হবে। যেসব খাবার গ্যাস্টিক রোগীদের জন্য প্রযোজ্য তার নিচে দেওয়া হলঃ
- শসা
- কলা
- পেঁপে
- আমড়া
- দই
- আদা
- দারুচিনি
- লবঙ্গ
- এলাচ পুদিনা পাতার পানি
গ্যাস্ট্রিক জাতীয় খাবার
যেসব খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিক হয় তা নিচে তুলে ধরা হলো;
- অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাবার।
- অতিরিক্ত চর্বি ও মসলাযুক্ত খাবার।
- বাইরের ফাস্টফুড খাবার।
- বিভিন্ন রকম ডাল।
- সয়াবিন।
- বিভিন্ন রকম সোডা।
- গম ও ওটস।
- গরম দুধ,দুগ্ধতার খাবার।
- চুইংগাম, চকলেট।
- মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি।
কি ওষুধ খেলে গ্যাস্ট্রিক ভাল হয়
গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ যদিও অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া উচিত না। কিন্তু রোগীর পরিস্থিতির উপর ডাক্তারেরা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দিয়ে থাকেন। তাই নিচে কিছু গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের নাম দেওয়া হলো;
- ফিনিক্স ২০
- ওমিপ্রাজল
- পেন্টানিক্স
- সার্জেল
- সেকলো
- লোসেকটিল
- প্যানটোপ্রাজল
- ইসোমিপ্রাজল
- রেনিটিডিন
- রাবি প্রাজল
- এন্টারসিড
- নিউ ট্রাক
শেষ কথা
আশা করছি, গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কোথায় কোথায় হয় আর্টিকেলটি পড়ে গ্যাস্ট্রিক সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। আর আমাদের সবারই উচিত খাবার ও নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপন সম্পর্কে সচেতন থাকা। তাহলেই আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে অনেকটাই পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। দীর্ঘদিন যাবৎ যদি গ্যাস্ট্রিকের প্রবলেম দেখা দেয় তাহলে দেরি না করে খুব দ্রুত অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
ড্রিমসসেফ আইটিির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url