কাতার টাকার মান কত জেনে নিন
ওমানের 1 টাকা বাংলাদেশের কত টাকা জানুনকাতার মধ্যপ্রাচ্যের একটি অন্যতম দেশ। কাতার আরবের পূর্ব উপকূল থেকে উত্তর উপকূলের প্রসারিত হওয়া উপদ্বীপে অবস্থিত। এই দেশে অধিক পরিমাণে খনিজ সম্পদ এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ রয়েছে যার কারণে বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশগুলোর মধ্যে স্থান পেয়েছে। কাতার সম্পূর্ণ একটি ইসলামিক দেশ।
আপনি যদি কাতার দেশ এবং কাতারের মুদ্রা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা কাতার দেশ এবং কাতারের মুদ্রা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন আজকের আর্টিকেলটি শুরু করা যাক,
কাতার দেশ সম্পর্কে
পারস্য উপসাগরের একটি দেশ হলো কাতার। বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে নিকটবর্তী সম্পূর্ণ ইসলামিক একটি দেশ হলো কাতার। আবার আমাদের দেশ থেকে অসংখ্য মানুষ কাতারে কাজ করার জন্য যায়। এছাড়াও ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপ কাতারে অনুষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে অধিক পরিমাণে আলোচনা এসেছে এই দেশটি। আমাদের মধ্যে অনেকেই কাতার দেশ সম্পর্কে জানতে চাই। যারা কাতার দেশ সম্পর্কে জানতে চায় আজকের এই আর্টিকেলটি তাদের জন্য। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা কাতার দেশ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরব। চলুন কাতার দেশ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক,
কাতার মধ্যপ্রাচ্যের এবং সম্পূর্ণ ইসলামিক একটি দেশ। কাতারের দক্ষিণে অবস্থিত রয়েছে সৌদি আরব এবং পশ্চিমে বাহরাইন। অর্থাৎ সৌদি আরব এবং বাহরাইন এর মাঝে অবস্থিত কাতার। সৌদি আরবের মত কাতার আরো একটি উত্তপ্ত শুষ্ক মরু এলাকা। এ দেশে মরুভূমির পরিমাণ অনেক বেশি। কাতারের রাজধানীর নাম দোহা। কাতারে মরুভূমি বেশি হওয়ার কারণে সেখানে জলাশয় নেই বললেই চলে এবং প্রাণী ও উদ্ভিদের সংখ্যা অনেক কম।
আরও পড়ুনঃ সৌদি আরবে গাড়ি চালানোর নিয়ম ২০২৪
যদিও কাতার একটি ছোট দেশ এবং সেই তুলনায় কাতারের জনসংখ্যা ও অনেক কম। কাতারের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক সংখ্যাক মানুষ বাইরের দেশ থেকে আসা অর্থাৎ তারা প্রবাসী। বর্তমান বিশ্বের যে সকল ধনী দেশগুলো রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম একটি হলো কাতার। তবে এই ধনী দেশ হয়ে ওঠার পেছনে দায়ী দেশটির খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস। ১৯ শতকের শেষের দিকে কাতারে আল থানি গোত্রের লোকেরা আমিরাত শাসন চালু করে।
পরবর্তীতে সেই দেশটির শাসনভার চালায় ব্রিটিশরা। বাংলাদেশের সাথে সাথে একই সময়ে অর্থাৎ ১৯৭১ সালে কাতার স্বাধীনতা লাভ করে। 1971 সালে কাতার কে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।তখনও দেশটি ছিল হতদরিদ্র। তবে দেশটিতে অধিক পরিমাণে খনিজ সম্পদ এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের উপস্থিতি থাকার জন্য খুব অল্প সময়ের মধ্যে দেশটির অর্থনীতি উন্নত হয়েছে। কাতারের অর্থনীতি খনিজ তেলের উপর নির্ভরশীল।
কাতারের মোট জনসংখ্যা ২৫ লাখ এবং কাতারের আয়তন ১১০০০ বর্গকিলোমিটার। কাতারের প্রধান ধর্ম হল ইসলাম। সেখানে অন্য ধর্মের অনুসারী নেই বললেই চলে। কাতারের প্রধান ভাষা হল আরবি ভাষা। কাতারের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬০ ভাগ মানুষ আরবিতে কথা বলে থাকে। কাতারের দ্বিতীয় প্রধান ভাষা হল ফারসি ভাষা এবং আন্তর্জাতিক কাজকর্মের ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়। কাতারের মুদ্রার নাম রিয়াল।
সৌদি আরবের মতো কাতারেও গাড়ি চালানোর দিক হলো ডান দিক। কাতারের রাজনীতি হল একটি পরম রাজতন্ত্র কাঠামো। ১৯৯৫ সাল থেকে শুরু করে দেশটির আমির অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন হামাদ বিন খলিফা আল থানি। ২০১৩ সালে সেই ক্ষমতা গ্রহণ করেন আব্দুল্লাহ বিন নাসের বিন খলিফা আল থানি। কাতারের বেশিরভাগ অঞ্চলে মরুভূমি যা আমাদের সকলেরই জানা রয়েছে। তবে ইতিহাস ঘেটে দেখলে দেখা যায় কাতারেও আগে ছিল বৃষ্টিবহুল পরিবেশ, জলপ্রপাত, অজু ঘাস এবং স্বচ্ছ পানির নালা।
আধুনিক ইতিহাসের মতে কাতারে কান্না নিয়ান নামক জেলে সম্প্রদায়ের বসবাস ছিল যারা অস্থায়ীভাবে মাছ ধরার মৌসুমে মাছ শিকার করত। আবার বর্তমান সময়ে কাতারের প্রধান ব্যবসা হল তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন। কিন্তু প্রাচীনকালে কাতারের ব্যবসা ছিল মাটির বাসন, চকমকি পাথর, এবং পাথর কাটার যন্ত্র। কাতার একটি ইসলামিক দেশ তা আমরা উপরে আলোচনা করেছি।
তবে কাতারের ইতিহাস থেকে জানা যায় ইসলামের পূর্ব যুগে আরব উপদ্বীপের অন্যান্য দেশের মতোই কাতারেও ছিল পারস্য শাসন এবং তাদের রাজবংশ। পরবর্তীতে সপ্তম শতকে সমগ্র আরব জুড়ে ইসলাম প্রচার হলে আরব উপদ্বীপে অবস্থিত কাতার ও ইসলামের ছায়াতলে চলে আসে। ৬২৮ সালে আমাদের সকলের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দক্ষিণ-আরবি অঞ্চলে ইসলাম প্রচারের জন্য আল হাদরামি নামক এক লোককে পাঠিয়ে দেন।
সেই সময় কাতারের প্রধান ছিলেন মঞ্জির বিন সাওয়া আল তামিমি। তখন কাতারের প্রধানের কাছে ইসলামের দাওয়াত আসলে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার জন্য সম্মত হন এবং আশেপাশে অন্যান্য গোত্রে ইসলাম প্রচারে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এই আর্টিকেলে আমরা কাতার দেশ সম্পর্কে এবং কাতারের ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি মনোযোগ সহকারে সম্পন্ন আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি কাতারদের সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
কাতারের রাজধানী কি?
কাতার দেশটি আমাদের অনেকের কাছেই পরিচিত। আবার অনেক মানুষ রয়েছে যারা কাতার সম্পর্কে জানে না। এই দেশের আকার ছোট হওয়া সত্ত্বেও বিশ্বের ধনী দেশগুলোর তালিকায় অন্যতম একটি কাতার। আমাদের অনেকেরই কাতার দেশ সম্পর্কে জানতে মনে চায়। উপরের আর্টিকেলে আমরা কাতারদের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমাদের মাঝে অনেক মানুষ রয়েছে যারা কাতারের রাজধানী সম্পর্কে জানেনা এবং জানতে চায়। যারা কাতারের রাজধানী সম্পর্কে জানতে চায় আজকের এই আর্টিকেলটি তাদের জন্য।
এই আর্টিকেলে আমরা কাতারের রাজধানী সম্পর্কে বিস্তারিত আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। চলুন আজকের আর্টিকেলটি শুরু করা যাক,কাতারের রাজধানীর নাম দোহা। দোহা একটি আরবি শব্দ। যেহেতু কাতারের প্রধান ভাষা হল আরবি তাই সেই দেশের রাজধানীর নাম আরবি ভাষাতে হওয়াটাই স্বাভাবিক। দোহা কাতারের রাজধানী এবং কাতারের প্রধান আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এই দেশের পূর্বে পারস্য উপসাগরের উপকূলে এবং আল ওয়া কাহারের উত্তরে এবং আল খায়েরের দক্ষিনে অবস্থিত দোহা শহরটি।
কাতারের মোট জনসংখ্যা ২৫ লাখ যার ৮০ পার্সেন্ট মানুষই দোহা শহরে বসবাস করে। দোহা কাতারের সবচেয়ে দ্রুততম বর্ধনশীল শহর। বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক এবং উন্নতমানের শহর গুলোর মধ্যে একটি এই দোহা। ১৮২০ সালের দোহা আলবিদ্যার নামক একটি শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিল। আমাদের অনেকেরই জানা আছে যে কাতারে শাসনভার চালিয়েছিল ব্রিটিশরা। বাংলাদেশের সাথে সাথে ১৯৭১ সালে কাতার ও স্বাধীনতা লাভ করে।
১৯৭১ সালে কাতার স্বাধীনতা লাভ করার পর দোহাকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাতারের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বিশ শতকের আগে কাতার হতদরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে একটি ছিল। সেই হতদরিদ্র দেশ থেকে বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে এই দোহা শহরের। এটি কাতারের অন্যতম বাণিজ্যিক শহর। এমনকি দোহা মধ্যপ্রাচ্যের একটি অন্যতম উদীয়মান আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। কাতারে যে সকল বড় বড় চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজিত হয় তার বেশিরভাগই দোহাই শহরে অনুষ্ঠিত হয়।
যেমনঃ ২০০৬ এশিয়ান গেমস, ২০১১ পান আরব গেমস,২০১১ এশিয়া কাপ, ২০২২ ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ সহ অসংখ্য খেলার নির্বাচিত শহর দোহা। এছাড়াও ২০২৭ ফিবা বাস্কেটবল বিশ্বকাপের আয়োজন হবে কাতারের রাজধানী দোহাতে। এই আর্টিকেলে আমরা কাতারের রাজধানী দোহা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
কাতারের মুদ্রার নাম কি
কাতার মধ্য প্রাচ্যের অন্যতম একটি ধনী দেশ। মধ্যপ্রাচ্যের বেশিরভাগ দেশেরই মুদ্রার নাম রিয়াল। কাতারের মুদ্রার নামও রিয়াল। তবে আপনাদের জানিয়ে রাখি যে বিশ্বের সবচেয়ে দামি মুদ্রার নাম হল দিনার। কুয়েতের দিনারের মূল্য বা মান বিশ্বের সব মুদ্রার চাইতে বেশি।আশা করি আপনি আপনার কাঙ্খিত উত্তরটি পেয়ে গিয়েছেন যে কাতারের মুদ্রার নাম রিয়াল।
কাতার ১ রিয়াল কত টাকা
আমাদের দেশ থেকে অসংখ্য মানুষ কাতারে কাজ করার জন্য যায়। কাতারে যাওয়ার আগে আমাদের জানতে হয় যে কাতারে ১ রিয়ালে কত টাকা। আবার বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রশ্নও আসে।তাই আমাদের সকলের জানা উচিত কাতারের ১ রিয়ালে কত টাকা। আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করব কাতারের ১ রিয়ালে বিভিন্ন দেশে কত টাকা? চলুন দেখে নেওয়া যাক যে, কাতারের ১ রিয়াল এক্সচেঞ্জ করলে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে কত টাকা পাওয়া যাবে।
- কাতারের ১ রিয়াল = বাংলাদেশি ৩০.২০ টাকা
- কাতারের ১ রিয়াল = পাকিস্তানি ৭৬.৫২ রুপি
- কাতারের ১ রিয়াল = আফগানিস্তানের ১৯.৮৭ আফগানি
- কাতারের ১ রিয়াল = ওমানী ০.১১ রিয়াল
- কাতারের ১ রিয়াল = নিউজিল্যান্ডের ০.৪৬ ডলার
- কাতারের ১ রিয়াল = সিঙ্গাপুরের ০.৩৭ ডলার
- কাতারের ১ রিয়াল = সৌদি ১.০৩ রিয়াল
- কাতারের ১ রিয়াল = রাশিয়ান ২৫.০৭ রুবেল
- কাতারের ১ রিয়াল = মেক্সিক্যান ৪.৬৫ পেশও
- কাতারের ১ রিয়াল = ইরানিয়ান ১১৫৫২.৪৬ রিয়াল
- কাতারের ১ রিয়াল = ইরাকি ৩৬০.49 দিনার
- কাতারের ১ রিয়াল = ইন্ডিয়ান ২২.৯৩ রুপি
উপরে আমরা কাতারের ১ রিয়াল এক্সচেঞ্জ করলে কয়েকটি দেশে কত টাকা পাওয়া যাবে তা তুলে ধরেছি। আশা করি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি বুঝতে পেরেছেন। কাতার ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা? আপনি যদি কাতারের ১ রিয়াল বা টাকা বাংলাদেশের টাকায় এক্সচেঞ্জ করেন তাহলে আপনি ৩০.২০ টাকা পাবেন। অর্থাৎ কাতারের ১ টাকা বাংলাদেশের ৩০.২০ টাকা।
কাতারের ৫০ দিরহাম বাংলাদেশের কত টাকা
বিভিন্ন কারণে আমাদের জানতে হয় কাতারের ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা ? আমাদের মধ্যে অনেকে কাতারের প্রবাসী হিসেবে যেতে চায় এবং তাদেরকে জানতে হয় কাতারের টাকায় বাংলাদেশের কত টাকা। এছাড়াও আমাদের মাঝে অনেকেই সাধারণ জ্ঞান বৃদ্ধি করার জন্য জানতে চায় যে কাতারের ১ রিয়াল/৫০ রিয়াল/১০০ রিয়াল/২৫০ রিয়াল অথবা ৫০০ রিয়ালে বাংলাদেশের কত টাকা। নিচে কাতারের কত রিয়াল বাংলাদেশের কত টাকা তা তুলে ধরা হলো;
- কাতারের ৫০ রিয়াল = বাংলাদেশের ১৫০৩.৯৩ টাকা
- কাতারের ১০০ রিয়াল = বাংলাদেশের ৩০০৭.৮৭০ টাকা
- কাতারের ২৫০ রিয়াল = বাংলাদেশের ৭৫১৯.৬৭৫০০ টাকা
- কাতারের ৫০০ রিয়াল = বাংলাদেশের ১৫০৩৯.৩৫০০ টাকা
- কাতারের ১০০০ রিয়াল = বাংলাদেশের ৩০২০০ টাকা
শেষ কথা
সম্মানিত পাঠকগণ, আজকের এই আর্টিকেলে আমরা কাতার দেশ এবং কাতারের টাকার মান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। বিশেষ করে যেসব প্রবাসী ভাইয়েরা কাতারে থাকে বা কাতারে যেতে চান তাদের ক্ষেত্রে কাতার রিয়াল ও বাংলাদেশের টাকার মান সম্পর্কে জানা আবশ্যক। পুরো লেখাটি পড়লে আশা করি টাকার মান সম্পর্কে ধারণা পাবেন। এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ড্রিমসসেফ আইটিির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url