বাংলাদেশের সেরা ১০ টি দর্শনীয় স্থান
পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনপ্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের এই বাংলাদেশ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা এই দেশে রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান। দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য মানুষ আসে এইসব দর্শনীয় স্থান দেখার জন্য। আবার আমাদের দেশেরই মানুষেরা কোথাও ভ্রমণ করতে যেতে চাইলে তারা জানতে চায় যে আমাদের দেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা বা দর্শনীয় স্থান কোনগুলো।
আপনি যদি বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আমাদের দেশের সেরা সব দর্শনীয় স্থান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু করা যাক।
বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা কোনটি
সবুজে ঢাকা আমাদের এই বাংলাদেশে রয়েছে অসংখ্য সুন্দর জায়গা বা দর্শনীয় স্থান। এইসব দর্শনীয় স্থান গুলো দেখার জন্য দেশ বিদেশ থেকে অসংখ্য পর্যটক আসে। এতগুলো দর্শনীয় স্থানের ভিড়ে আমাদের অনেকেরই মনে প্রশ্ন জাগে যে বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা কোনটি। আবার অনেকে ভ্রমণ করতে চায় দেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গায়। তখন সকলেই জানতে চায় বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা কোনটি? তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা কোনটি তা আপনাদের সামনে তুলে ধরব। চলুন দেখে নেওয়া যাক বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা কোনটি?
আমাদের দেশের মধ্যে অনেক সুন্দর জায়গা রয়েছে যেগুলো দেখলে মন জুড়ায় যায়। তাই এইসব সুন্দর জায়গা গুলোর মধ্যে থেকে একটি জায়গাকে সেরা হিসেবে বেছে নেওয়া অনেক কঠিন। তবুও আমরা বাংলাদেশের সকল সুন্দর জায়গাগুলো থেকে একটি জায়গাকে বা দর্শনীয় স্থানকে সেরা হিসেবে গ্রহণ করেছি তা হল কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। কক্সবাজার বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত একটি সমুদ্র সৈকত। এটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার মধ্যে অবস্থিত।
এই কক্সবাজারে রয়েছে পৃথিবীর দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক বায়ুময় সমুদ্র সৈকত যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১২০ কিলোমিটার। এই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত একই সাথে বাংলাদেশের বৃহত্তম সামুদ্রিক মৎস্য বন্দর।এই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে মৎস্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ প্রতিবছর অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। কক্সবাজার এই নামটি এসেছে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এক অফিসার থেকে যার নাম ক্যাপ্টেন হীরাম কক্স।
চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ১৫২ কিলোমিটার দক্ষিণে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত অবস্থিত। এটি আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র। রাজধানী ঢাকা থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব প্রায় ৪১৪ কিলোমিটার। রাজধানী ঢাকা থেকে আপনারা আকাশ পথে অথবা সড়কপথের কক্সবাজারে যেতে পারবেন। এছাড়াও চট্টগ্রাম শহর থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে কিছুদিন আগে।
বর্তমানে চট্টগ্রাম শহর থেকে দুইটি ট্রেন কক্সবাজারে যাওয়া আসা করে। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে কেন্দ্র করে সেখানে গড়ে উঠেছে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান।এখানে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে অনেক ৫ তারকা হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট। এছাড়াও মানুষকে আনন্দ দেওয়ার মতো রয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠান যেমনঃ বার্মিজ মার্কেট, ঝিনুক মার্কেট, ওয়াটার বাইকিং, প্যারাসেলিং, বিচ বাইকিং, ককস কার্নিভাল সার্কাস শো, দরিয়া নগর ইকোপার্ক ইত্যাদি।
আবার আপনারা কক্সবাজারে গেলে সেখানে নাইট বিচ কনসার্ট উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়াও সমুদ্র সৈকতকে রাতের বেলা লাইটিং এর মাধ্যমে আলোকিত করার ফলে রাতের বেলায় এই সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য অনেক গুণে বেড়ে যায় এবং পর্যটকরা তা উপভোগ করে। এই কক্সবাজার ছাড়াও বাংলাদেশে রয়েছে বেশ কিছু সুন্দর জায়গা যেগুলোকে কক্সবাজারের কাতারেই রাখা হয়। নিচে কয়েকটি সুন্দর স্থানের নাম দেয়া হলোঃ
- সাজেক ভ্যালি
- সেন্ট মার্টিন
- সুন্দরবন
- টাঙ্গুয়ার হাওর
- রাতারগুল হাওর
- নাফাখুম
- নিঝুম দ্বীপ
- কুয়াকাটা
- বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক
বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর পার্ক কোনটি
শান্তিপূর্ণভাবে বেঁচে থাকতে গেলে আমাদের সবার জীবনে বিনোদনের প্রয়োজন। আবার এই বিনোদনের কথা চিন্তা করলেই সবার প্রথমে আমাদের মাথায় আসে ঘুরতে যাওয়ার কথা। আমরা সকলেই ঘুরতে গেলে বিভিন্ন পার্কে যেয়ে থাকি। আমাদের বাংলাদেশে অসংখ্য সুন্দর সুন্দর পার্ক রয়েছে। এই পার্কগুলো বিনোদনের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে থাকে।
আবার আমাদের মাঝে অনেকে রয়েছে যারা ঘুরতে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর পার্ক কোনগুলো তা খুজতেছে। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বাংলাদেশের সুন্দর কিছু পার্ক নিয়ে কথা বলব। নিচে বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর ৫ টি পার্ক, তাদের অবস্থান এবং প্রতি জনের প্রবেশ মূল্য তুলে ধরা হলোঃ
১.Fantacy Kingdom: আমরা যদি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সুন্দর পার্কের কথা বলি তাহলে সবার প্রথমে যে পার্কের কথা আসবে তা হলো ফ্যান্টাসি কিংডম পার্ক। ফ্যান্টাসি কিংডম বর্তমান বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর এবং বিলাসবহুল পার্ক। এই পার্কটি রাজধানীর আশুলিয়া থানার জামগড়া এলাকায় অবস্থিত। ফ্যান্টাসি কিংডম পার্কটি প্রায় ২০ একর জমি নিয়ে অবস্থিত।
আপনি যদি পার্কটিতে প্রবেশ করতে চান তাহলে প্রতি টিকেটের মূল্য পড়বে ৪০০ টাকা এবং বাচ্চাদের জন্য প্রতিটি টিকেটের মূল্য ৩০০ টাকা। এই পার্কটির মধ্যে রয়েছে অনেক মজাদার রাইডগুলো।আপনি যদি রাইড সহ প্যাকেজ কিনতে চান তাহলে এর দাম পড়বে ৮০০ টাকা। সময় পেলে অবশ্যই এই পার্কটি একবার ঘুরে আসবেন।
২.Foys Lake: বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর পার্কের তালিকায় আমরা ২য় অবস্থানে যে পার্কটিকে রেখেছি সেটি হল ফয়েজ লেক। ফয়েজ লেক হল মূলত একটি কৃত্রিম হ্রদ। এটি চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকায় অবস্থিত। আপনি যদি এই পার্কে ঘুরতে যান তাহলে একটি সুন্দর প্রাকৃতিক নিরিবিলি পরিবেশ উপভোগ করতে পারবেন।
এই ফয়েজ লেকটি ১৯২৪ সালে খনন করা হয়। খনন করার পর এই হ্রদটির নাম ছিল পাহাড়তলী হ্রদ।পরবর্তীতে এই হ্রদটিকে ফয়েজ লেক নামে পরিচিত করা হয়। এই পার্কটিতে প্রতিজনের টিকেট মূল্য অর্থাৎ প্রত্যেকটি টিকেট মূল্য ৩০০ টাকা।
৩. Nandan Park, Dhaka: বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পার্কের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যে পার্কটি সেটি হল নন্দন পার্ক। এই পার্ক টি রাজধানীর সাভার উপজেলায় অবস্থিত। এই পার্কটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো অল্প টাকায় সুন্দর একটি ভ্রমণ নিশ্চিত করা। এই পার্কটির যাত্রা বেশি দিন আগের নয়।নন্দন পার্ক ২০০৩ সালের দিকে যাত্রা শুরু করে।
তারপর থেকে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রায় ৩৩ একর জমির উপর এই নন্দন পার্কটি অবস্থিত। এই পার্কটিতে প্রতি জনের প্রবেশ মূল্য মাত্র ৯০ টাকা। ফ্যান্টাসি কিংডম এর মত এ পার্কটিতে রয়েছে অনেকগুলো মজার রাইড। আপনি যদি সকল রাইড প্যাকেজ সহ কিনতে চান তাহলে এর দাম পড়বে ২৫০ টাকা।
৪.Jamuna Future Park: আমাদের এই সেরা পার্কের লিস্টে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্ক। যমুনা ফিউচার পার্কটি রাজধানীর বারিধারাতে অবস্থিত রয়েছে। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের মানুষের কাছে বেশ পছন্দের পার্ক হল যমুনা ফিউচার পার্ক। এই পার্কটি নতুন তৈরিকৃত পার্ক গুলোর মধ্যে একটি। যমুনা ফিউচার পার্কটি ২০১৩ সালের শেষের দিকে সর্বসাধারনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই বেশ খ্যাতি অর্জন করেছে এই পার্কটি। এই পার্কের প্রতিটি টিকিটের মূল্য ৩০০ টাকা।
৫. Water Kingdom: বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর পার্কের লিস্টে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে ওয়াটার কিংডম। দর্শনার্থীদের কাছে অনেক পছন্দের পার্ক হচ্ছে এই ওয়াটার কিংডম। এই পার্কটির অবস্থান ঢাকা শহরের জামগড়াতে। যারা সুইমিংপুলে গোসল করতে চায় তাদের কাছে এই পার্কটি অধিক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই পার্কটিতে প্রতিজনের প্রত্যেকটি টিকিট মূল্য ৩৮০ টাকা। সময় হলে অবশ্যই এই পার্কটিতে আপনার ঘুরে আসা উচিত।
বাংলাদেশের সেরা ১০ টি দর্শনীয় স্থান
আমাদের এই চিরসবুজ বাংলাদেশের মধ্যে রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। এই দর্শনীয় স্থানগুলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর হয়ে আছে। আমাদের দেশের এইসব দর্শনে স্থানগুলো দেখার জন্য প্রতিবছর পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিদেশি পর্যটক সহ অসংখ্য দেশি পর্যটক আসে। আবার অনেকের ভ্রমণ করার জন্য দেশের সেরা দর্শনের স্থানগুলো সম্পর্কে জানতে চায়।
আপনারা যারা বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর বা সেরা দর্শনীয় স্থানগুলো সম্পর্কে জানতে চান তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বাংলাদেশের সেরা ১০ টি দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত আপনাদের সামনে তুলে ধরব। চলুন জেনে নেওয়া যাক বাংলাদেশের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে।
- কক্সবাজার।
- সেন্ট মার্টিন।
- সাজেক ভ্যালি।
- সুন্দরবন।
- রাতারগুল হাওর।
- টাঙ্গুয়ার হাওর।
- নাফাখুম।
- কুয়াকাটা।
- নিঝুম দ্বীপ।
- বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক।
কক্সবাজারঃ কক্সবাজার বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর একটি দর্শনীয় স্থান বা পর্যটক কেন্দ্র। এটি কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত। আবার চট্টগ্রাম শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১৫৩ কিলোমিটার। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত। কক্সবাজারের রয়েছে অদ্ভুত রকমের ঝিনুক, বালুর নরম বিছানা, সমুদ্রের বিশাল ঢেউ। এছাড়াও কক্সবাজারে রাতের বেলায় লাইটিং এর ব্যবস্থা করা আছে যার কারণে এই সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য রাতের বেলা অনেকগুণ বেড়ে যায়। এক কথায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বাধ্য করবে।
সেন্ট মার্টিনঃ সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের এবং বঙ্গোপসাগরের উত্তর পূর্ব অংশে অবস্থিত একটি ছোট দ্বীপ। এই দ্বীপটির দূরত্ব মাত্র ৮ কিলোমিটার। বাংলাদেশের টেকনাফ হতে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মায়ানমার উপকূল থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে নাগ নদীর মোহনায় সেন্টমার্টিন দ্বীপটি অবস্থিত। সেন্ট মার্টিন দ্বীপে বঙ্গোপসাগরের নীল পানি আপনাকে মুগ্ধ করবে।এছাড়াও এই দ্বীপে রয়েছে অসংখ্য নারিকেল গাছ। এই দ্বীপের নারিকেল গাছ থাকার কারণে একে নারিকেল জিনজিরা ও বলা হয়।
সাজেক ভ্যালিঃ সাজেক ভ্যালি বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলের একটি জেলা রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার অন্তর্গত সাজেক ইউনিয়নের একটি বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান। পাহাড় এবং সবুজ গাছ গাছালির অপরূপ সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। সাজেক ভ্যালিতে সকাল বিকাল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বদলিয়ে থাকে। পাহাড়ের গায়ে মেঘের ধাক্কার অপরূপ দৃশ্য দেখার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা এখানে আসে।
সুন্দরবনঃ বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে সুন্দরবন। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত। বিভিন্ন সুন্দর গাছ গাছালিতে ভরা এই প্রশস্ত বনভূমি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট। ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে মর্যাদা প্রদান করে। সুন্দরবনের আয়তন প্রায় ১০০০০ বর্গ কিলোমিটার।
এই ১০০০০ বর্গ কিলোমিটার সীমানার মধ্যে ৬৫১৭ বর্গ কিলোমিটার বাংলাদেশের মধ্যে রয়েছে এবং বাকি ৩৪৮৩ বর্গ কিলোমিটার রয়েছে ভারতের মধ্যে। সুন্দরবনের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন বৈচিত্রপূর্ণ গাছ যার সৌন্দর্যে আপনি মুগ্ধ হবেন। এছাড়াও সুন্দরবনে রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার সহ অসংখ্য বন্য প্রাণী। আপনি যদি সুন্দরবনে বেড়াতে চান সেখানে আপনি সরাসরি এসব বন্যপ্রাণীদের দেখতে পাবেন।
রাতারগুল হাওরঃ রাতারগুল হাওর সিলেটের গোয়ালঘাটে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের একটি মিঠা পানির জলা বন।একসময় বাংলাদেশের একমাত্র জলা বন ছিল এই রাতারগুল। এই হাওরের মাঝে রয়েছে অসংখ্য রাতা গাছ। হাওরের এই মিঠা পানির মাঝে রাতা গাছ থাকার কারণে এই জায়গার নাম রাতারগুল হাওর। সময় পেলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভরা এই জায়গাটিকে ঘুরে দেখে আসতে পারেন।
টাঙ্গুয়ার হাওরঃ টাঙ্গুয়ার হাওর বাংলাদেশের উত্তর পূর্ব প্রান্তে সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত। এই হাওরটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জল মহল। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় মিঠা পানির হাওর। এ হাওরের মাঝে রয়েছে অসংখ্য হিজলগাছ। এই হিজল গাছগুলোতে পাখিদের কল-কলানি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এছাড়াও এ হাওরটি জলজ প্রাণীর এক বিশাল ভান্ডার।
নাফাখুমঃ এটি একটি অপরূপ ঝরনা। এই নাফাখুম ঝরনাটি বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রোমানটি ইউনিয়নের একটি অপরূপ জলপ্রপাত। এই অপরূপ ঝরনাটি বান্দরবান শহর থেকে ৭৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সেখানে পৌঁছানোর জন্য সাঙ্গু নদী ধরে র রুমাকির দিকে নৌকা বেয়ে ধীরে ধীরে উঠতে হয়। রমাকি নদীতে নাফা নামে এক ধরনের মাছ পাওয়া যায় যার কারণে এই ঝর্ণাটির নাম দেয়া হয়েছে নাফাখুম ঝরনা।
কুয়াকাটাঃ কুয়াকাটা বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলে পটুয়াখালী জেলায় অবস্থিত একটি সমুদ্র সৈকত। এই কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতটি পর্যটকদের কাছে অনেক পছন্দের হয়ে থাকে। যার কারণে পর্যটকদের কাছে এটি সাগরকন্যা হিসেবে পরিচিত। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দৃশ্য হলো এখান থেকে আপনি সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটি দেখতে পারবেন। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের একমাত্র সমুদ্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটি দেখা যায় এবং এই দৃশ্য দেখতে অনেক সুন্দর লাগে।
নিঝুম দ্বীপঃ নিঝুম দ্বীপ বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অন্তর্ভুক্ত। এটি বাংলাদেশের ছোট্ট একটি দ্বীপ যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। এই নিঝুম দ্বীপের প্রাচীন নাম ছিল ওসমান বাউলার চর।আবার এই দ্বীপকে কেউ ইচ্ছামতির চর বলতো যার প্রধান কারণ সেখানে থাকা ইছা মাছ। এই নিঝুম দ্বীপে প্রচুর ইছা মাছ বা চিংড়ি মাছ পাওয়া যায়। এছাড়াও এই দ্বীপটিতে রয়েছে বহু রকমের বন্য প্রাণী।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কঃ বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক বাংলাদেশের গাজীপুর জেলায় অবস্থিত। এই পার্কের পুরো নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক যাকে সংক্ষেপে বলা হয় বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। এটি গাজীপুর জেলার সবচেয়ে বড় এবং সুন্দর পার্ক। এই পার্কে বাঘ, হরিণ সহ বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখি রয়েছে। থাইল্যান্ডের সাফারি পার্ককে অনুসরণ করে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক তৈরি করা হয়েছে। এই পার্কের মধ্যে বিশেষ সেফটির মাধ্যমে সরাসরি বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী দেখা যায়।
উত্তরবঙ্গের দর্শনীয় স্থান
বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে একটি বড় অংশ উত্তরবঙ্গে অবস্থিত। এই দর্শনে স্থানগুলো দর্শনার্থীদের কাছে স্বর্গরাজ্যের মতো। উত্তরবঙ্গে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান রয়েছে যেগুলো দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ পাড়ি জমায় উত্তরবঙ্গের দিকে। আমাদের দেশের উত্তরবঙ্গ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর হয়ে আছে।
এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যগুলোর মধ্যে রয়েছে পাহাড়, নদী, বনভূমি এবং বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান। আমাদের মাঝে অনেকে রয়েছে যারা উত্তরবঙ্গের অসংখ্য দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্য থেকে কিছু সেরা দর্শনের স্থানের নাম জানতে চায়। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা উত্তরবঙ্গের কিছু দর্শনীয় স্থানের নাম আপনাদের সামনে তুলে ধরব। নিচে উত্তরবঙ্গের সেরা ১০ টি দর্শনীয় স্থানের নাম তুলে ধরা হলোঃ
- ষাট গম্বুজ মসজিদ
- ঠাকুরগাঁও এর গজনী অবকাশ
- রংপুরের তাজহাট জমিদার বাড়ি
- দিনাজপুরের কান্তজি মন্দির
- নীলফামারির নীল সাগর
- শীলা দেবীর ঘাট
- পঞ্চগড়ের চা বাগান
- স্বপ্নপুরী মহাস্থানগড় দুর্গ
- ইকোপার্ক
- বঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমুখী সেতু
রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান কি কি
রাজশাহী বাংলাদেশের বিভাগ গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। এটি বাংলাদেশের শিক্ষা নগরী হিসেবে পরিচিত। পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী শহর পর্যটকদের কাছে অনেক জনপ্রিয়। এর রাজশাহীতে রয়েছে প্রাচীন বাংলার সমৃদ্ধ ইতিহাস যেগুলো হল বিখ্যাত মসজিদ, মন্দির এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা। নিচে রাজশাহী শহরের কিছু বিখ্যাত দর্শনীয় স্থানগুলোর নাম তুলে ধরা হলোঃ
- সাফিনা পার্ক
- উৎসব পার্ক
- রাজশাহী কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা
- শিশু পার্ক
- পুঠিয়া রাজবাড়ী
- বাঘা মসজিদ
- শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা
- বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর
সিলেটের সুন্দর জায়গা
আমাদের দেশের মানুষের কাছে ভ্রমণের কথা মনে পড়লেই মাথায় চলে আসে সিলেটের নাম। এটি বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত একটি বিভাগ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব নিদর্শন রয়েছে এই সিলেট বিভাগে। আবার সিলেটকে বাংলাদেশের লন্ডনও বলা হয়। এখানে রয়েছে অসংখ্য ঐতিহাসিক মসজিদ, ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ, প্রাকৃতিক ঝর্ণা ইত্যাদি। সিলেটে ভমন করতে চাইলে আমাদের জানতে হয় সিলেটের সুন্দর জায়গা গুলোর নাম। নিচে সিলেটের সবচেয়ে সুন্দর ১০ দশটি পর্যটন কেন্দ্রের নাম তুলে ধরা হলো;
- জাফলং
- মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত
- রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট
- শ্রীমঙ্গল
- হামহম জলপ্রপাত
- টাঙ্গুয়ার হাওর
- পাংথুমাই জলপ্রপাত
- বিছনাকান্দি
- খাদিম নগর জাতীয় উদ্যান
- লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান
খাগড়াছড়ির দর্শনীয় স্থান
যে সকল ভ্রমণ পছন্দ কারীরা কিছুটা এডভেঞ্চারাস এবং রহস্যময় ভ্রমণ করতে চান তাদের জন্য সবচেয়ে উপযোগী দর্শনীয় স্থান হল খাগড়াছড়ির দর্শনীয় স্থান। খাগড়াছড়ি এমন একটি জেলা যেখানে যেদিকেই চোখ যায় পুরোটাই সবুজ। এটি বাংলাদেশের একটি পার্বত্য জেলা। খাগড়াছড়ি জেলায় পাহাড়, নদী, ঝরনা, সমতল ভূমি সবকিছুই রয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলার সবুজ গাছগাছালিতে ঢাকা পাহাড় এবং ঝরনার পানির ছুটে চলা পর্যটকদের মুগ্ধ করে তোলে। খাগড়াছড়িতে অনেক দর্শনীয় স্থান এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে যেগুলো দেখার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকরা আসে। তাহলে চলুন খাগড়াছড়ির কিছু দর্শনীয় স্থানের নাম জেনে নেওয়া যাক,
- মাতাই পুখিরি
- আলুটিলা গুহা
- রিশান ঝর্ণা
- তৈদু ছড়া ঝর্ণা খাগড়াছড়ি
- হর্টিকালচার পার্ক খাগড়াছড়ি
- হাতিমুরা বা হাতি মাথা
- শান্তিপুর অরণ্য কুঠির খাগড়াছড়ি
- মায়াবিনী লেক
- নিউজিল্যান্ড পাড়া
- মানিকছড়ি মং রাজবাড়ী
উপরে আমরা খাগড়াছড়ির কিছু অপরূপ সৌন্দর্য ভরপুর দর্শনীয় স্থানের নাম তুলে ধরেছি। এখানে তুলে ধরা সবগুলো দর্শনীয় স্থানই অত্যন্ত সুন্দর। আপনি চাইলে উপরে দেওয়া দর্শনীয় স্থানগুলোর যেকোনো স্থানে ভ্রমণ করতে পারেন।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠকগণ, আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বাংলাদেশের সেরা কিছু দর্শনের স্থানের নাম আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। আপনারা যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে আপনারা বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ড্রিমসসেফ আইটিির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url