মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ

জ্বর হলে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিনআপনার বাসার আশেপাশের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকার কারণে যদি মশা অনেক বেশি হয় তবে এখনই আপনার মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে সচেতন হওয়া দরকার। আর সচেতন হতে হলে আমাদের লেখা মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ এই আর্টিকেলটি পড়ুন। এই আর্টিকেলে আমরা মশার আয়ু কত দিন ও মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ
তাই আপনি যদি মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আশা করছি, আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যটি খুঁজে পাবেন।

মশার জন্ম কিভাবে

আমরা সকলেই মশার সাথে অনেক বেশি পরিচিত। মশা ছোট প্রজাতির একটি পতঙ্গ। মশা মানুষ সহ বিভিন্ন ধরনের স্তন্যপায়ী প্রাণী তাছাড়াও বিভিন্ন রকম জীবন্ত প্রাণীর রক্ত খেয়ে জীবন যাপন করে থাকে। কিন্তু সব প্রজাতির মশা রক্ত খেয়ে জীবন যাপন করে থাকে তা কিন্তু নয়। মশার মধ্যেও কিছু মশা রয়েছে যে সকল মশা রক্ত খায় না। 

বিশেষ করে পুরুষ মশার ক্ষেত্রে এটি লক্ষ্য করা যায়। মশার মধ্যে দুই ধরনের মশা রয়েছে একটি হচ্ছে পুরুষ মশা আর একটি হচ্ছে স্ত্রী মশা। তাছাড়াও বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে পুরো পৃথিবী জুড়ে ৩,৫০০ এর থেকেও বেশি প্রজাতির মশা রয়েছে। স্ত্রী মশার বংশবৃদ্ধি করার জন্য রক্তের প্রয়োজন হয়। 

তাই স্ত্রী মশার ক্ষেত্রে রক্ত খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। স্ত্রী মশা বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানির ভেতর ডিম পাড়ে। মশা ডিম পাড়ার জন্য পানি অথবা পানির নিকটবর্তী স্থান নির্বাচন করে থাকে। একটি স্ত্রী মশা পুরো জীবনচক্রে ১০০ থেকে ২০০ টি ডিম দিয়ে থাকে। 

স্ত্রী মশা পানিতে ডিম পাড়ার পর সেই ডিম থেকে পূর্ণাঙ্গ মশাই রূপ নিতে সময় লাগে ৪০ দিন। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর পরিবর্তন দেখা দেয়। কারণ কিছু কিছু ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে একটি ডিম থেকে পূর্ণাঙ্গ মশাই রূপ নিতে সময় লাগে ৫ দিন।

মশার উপকারিতা

আমরা সবাই মশা কে আমাদের শত্রু হিসেবেই বিবেচিত করে রেখেছি। আর সেই শত্রুকে হারানোর জন্য ব্যবহার করি নানা রকমের পদ্ধতি। কখনো কয়েল দিয়ে অথবা কখনো বিভিন্ন রকম মশা মারা উপাদান দিয়ে মশাকে হারিয়ে থাকি। বিগত কয়েক বছর থেকে মশার কারণে আমাদের দেশে ছড়িয়ে পড়েছে মহামারী ডেঙ্গু জ্বর। আর সেই কারণে মৃত্যুবরণ করেছে হাজার হাজার মানুষ। 

তাই মশা আমাদের কাছে আরো বেশি ক্ষতিকারক রূপ ধারণ করেছে। সারাদিন মশার উপদ্রব খুব একটা দেখা না গেলেও সন্ধ্যার পরে মশার উপদ্রব যেন একটু বেশি লক্ষ্য করা যায়। আমরা সকলেই মশার অপকারিতা সম্পর্কে জানি। কিন্তু আপনি কি জানেন মশার উপকারিতাও রয়েছে। আপনি এই কথা শুনে নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন। কিন্তু এটি একেবারে সত্য কথা। 

মশার অপকারিতা থাকার পাশাপাশি রয়েছে উপকারিতা। মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত কিন্তু কয়জনই বা মশার উপকারিতা সম্পর্কে জানি। আমি এখন আপনাদের সামনে মশার উপকারিতা তুলে ধরার চেষ্টা করব।

উপকারিতাঃ

মশা আমাদের পৃথিবীর বুকে একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য শৃংখল হিসেবে কাজ করে থাকে। আমাদের পৃথিবীর বুকে নানা ধরনের পাখি রয়েছে যে সকল পাখি মশা খেয়ে থাকে। আর তাই যদি পৃথিবীর বুকে মশা না থাকে তাহলে সেই সকল পাখির খাবার কমে যাবে। তাছাড়াও পৃথিবীর বুকে বিভিন্ন ধরনের ফুল রয়েছে যে সকল ফুলের পরাগায়নের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে মশা। 

তাই যদি মশা না থাকে তাহলে সেই সকল ফুল কখনোই পরাগায়ন হবে না। এছাড়াও বিভিন্ন জলাশয়ে মশা ডিম পেড়ে বংশবৃদ্ধি করে আর সেই সকল ডিম জলাশয়ে থাকা মাছগুলো খেয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বলা যায় যে মশার ডিম সেসকল জলাশয়ে থাকা মাছের খাদ্যের চাহিদা অনেকটা পূরণ করে থাকে। আমাদের পৃথিবীর বুকে অনেক ঘন ঘন জঙ্গল রয়েছে যে সকল জঙ্গলে মশার উপদ্রব এতটাই বেশি থাকে যে কোন মানুষ সেই জঙ্গলে প্রবেশ করতে চাই না। 

আর যদি পৃথিবীর বুকে মশা না থাকে তাহলে খুব সহজেই মানুষ সেই সকল জঙ্গলে প্রবেশ করতে পারবে এবং গাছপালা কেটে ধ্বংস করে ফেলবে। আমাদের দেশে প্রতিবছর শীতে বিভিন্ন দেশ থেকে অতিথি পাখি আসে সে সকল অতিথি পাখির মূল খাদ্য হচ্ছে মশা। মশা যদি না থাকে তাহলে সেই সকল পাখি ও খাদ্যের অভাবে আমাদের দেশে দেখা যাবে না।

উপরের আলোচনা থেকে আমরা খুব সহজেই বুঝতে পারছি যে পৃথিবীতে মশার ও উপকারিতা রয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু গবেষক এই উপকারিতার ক্ষেত্রে দ্বিমত প্রকাশ করেন। তারা মনে করেন যে সকল ফুল পরাগায়ন এর জন্য মশার অথবা যে সকল প্রাণীর খাদ্য মশা হিসেবে সকল প্রাণীর খাদ্য কিংবা পরাগায়নের মাধ্যম অন্য কিছু হতে পারে। 

কিন্তু অবশ্যই তারা এটাও বলেছে যে অন্য কিছু যদি হয়ে থাকে তাহলে সেটি মশার থেকেও অনেক বেশি ভয়ংকর হবে। যা খুব সহজেই মানুষের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ বিস্তার করে থাকবে।

মশার আয়ু কত দিন

আমরা মশা সম্পর্কে অনেক কিছু জেনে থাকলেও অনেকে মশার আয়ুষ্কাল সম্পর্কে অবগত নয়। আমরা অনেকেই জানিনা একটি মশা কতদিন বাঁচে অথবা একটি মশার আয়ু কত দিন। মশা আমাদের পৃথিবীর বুকে আনুমানিক ২৫ বছর ধরে রয়েছে। আর এই সকল মশা রক্ত খাওয়ার মাধ্যমে একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে রোগ জীবাণু বহন করে থাকে।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে একটি পুরুষ মশার চাইতে একটি মহিলা মশার আয়ুষ্কাল বেশি। একটি পুরুষ মশা বেঁচে থাকে একদিন অথবা যদি একদিনের বেশি ও বেঁচে থাকে তাও সেই সকল পুরুষ মশার অবস্থা অনেক বেশি দুর্বল থাকে। অপরদিকে একটি নারী মশা বেঁচে থাকে ৬ সপ্তাহের ও বেশি সময়।

মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ

আমরা সকলেই জানি মশা রোগের জীবাণু বহনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। মশা রক্ত খাওয়ার মাধ্যমে একজনের শরীর থেকে আর একজনের শরীরে বিভিন্ন রকম রোগ জীবাণু ছড়িয়ে থাকে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে সেই সকল রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করে। অধ্যাপক কবিরুল বাসার জানিয়েছেন যে বাংলাদেশে মশা বাহিত রোগ এখন পর্যন্ত পাঁচটি আবিষ্কৃত হয়েছে। মশা বাহিত রোগের নাম গুলো আলোচনা করলাম।

ম্যালেরিয়াঃ ম্যালেরিয়া রোগের সাথে আমরা কম বেশি সকলেই পরিচিত। আমরা অনেকেই এই রোগের নাম এর আগেও শুনেছি কিংবা জেনেছি। এটি একটি মশাবাহিত রোগ। এই রোগের জীবাণু বাহনের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশা। আমাদের দেশে প্রায় ৭ ধরনের ম্যালেরিয়া রোগ দেখা যায়। বাংলাদেশের বিশেষ করে পার্বত্য এলাকায় বেশি এই রোগ দেখা দিয়ে থাকে।

ম্যালেরিয়ার লক্ষণ সমূহঃ
  • কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা।
  • জ্বর যাওয়া আসা।
  • খাবারের প্রতি অনীহা।
  • অত্যাধিক ঘাম হওয়া।
  • খিচুনি দেখা দিতে পারে।
ফাইলেরিয়াঃ ফাইলেরিয়া রোগের প্রধান জীবাণু বহনকারী হচ্ছে কিউলেক্স ও ম্যানসোনিয়া প্রজাতির মশা। এই রোগের বিস্তার লক্ষ্য করা যায় বাংলাদেশের প্রায় ৩৪ জেলার মধ্যে।

ফাইলেরিয়ার লক্ষণসমূহঃ
  • কোন ব্যক্তি ফাইলেরিয়ায় আক্রান্ত হলে খুব বেশি লক্ষণ প্রকাশ পায় না।
  • হালকা অথবা তীব্র জল হতে পারে।
  • হাত-পা কিংবা শরীরের যে কোন অংশ ফুলে যেতে পারে।
চিকুনগুনিয়াঃ চিকুনগুনিয়া রোগের প্রধান বাহক হচ্ছে এডিস মশা। এডিস মশার সাহায্যে এই রোগ মানুষের শরীরে ছড়িয়ে থাকে। আমাদের দেশে চিকনগুনিয়া দেখা দেয় ২০০৮ সালে।

চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ সমূহঃ
  • মাথাব্যথা
  • দুর্বলতা
  • হালকা অথবা তীব্র জ্বর
  • শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা
  • হাড়ের সংযোগস্থলে দীর্ঘদিন ব্যাথা
  • বমি বমি ভাব
  • শরীরে র‍্যাশ দেখা দেওয়া
জাপানিজ এনসেফালাইটিসঃ এ রোগের প্রধান বাহক হচ্ছে কিউলেক্স মশা। জাপানিজ এনসেফালাইটিস আমাদের দেশে প্রথম আবিষ্কৃত হয় ১৯৭৭ সালে। আস্তে আস্তে এই রোগটি বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।১৯ ৭৭ সালে এই রোগ দেখা দিলেও বর্তমান সময়ে এই রোগের রোগী খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই অনেকে মনে করেন যে এই রোগের অস্তিত্ব এখন বাংলাদেশে নেই।

ডেঙ্গুঃ আমরা সকলেই ডেঙ্গুর সাথে পরিচিত। ডেঙ্গু হওয়া মানেই মশা বাহিত রোগ এটি আমরা সকলেই জানি। ডেঙ্গু জ্বরের প্রধান বাহক হচ্ছে এডিস ও অ্যালবোপিকটাস মশা মশা। আগে এই রোগের প্রকোপ খুব একটা দেখা না গেলেও বর্তমান সময়ে এই রোগ মহামারী আকার ধারণ করেছে।

ডেঙ্গুর লক্ষণ সমূহঃ
  • তীব্র জ্বর
  • তীব্র পেট ব্যথা
  • সাথে পুরো শরীরে ব্যথা
  • জ্বর বেশিদিন হলে র‍্যাশ বের হতে পারে
  • বমি বমি ভাব অথবা বমি

মশা তাড়ানোর উপায় কি

মশা তাড়ানোর জন্য অনেকেই অনেক রকম পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকেন। তাও অনেক ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় বাসায় মশার উপদ্রব কিছুতেই কমছে না। সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হচ্ছে মশার উপদ্রব। আর মশা দ্বারা ছড়িয়ে পড়া রোগের কারণে অনেকেই মশা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ছেন। 

আমি এখন আপনাদের সামনে কিছু ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। যে সকল ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে আপনি আপনার বাসায় মশার উপদ্রব কমাতে পারবেন। মশা তাড়ানোর উপায় কি সেই সম্পর্কে আলোচনা করলাম।
  • নিমের তেলের সাহায্যে আপনি আপনার বাসায় মশার উপদ্রব কমাতে পারেন। নিমের তেলের সাথে কিছুটা পরিমাণ নারকেল তেল মিশিয়ে মানুষের শরীরে কিংবা যেকোন পালিত পশুর শরীরে ব্যবহার করলে মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
  • সুগন্ধি ব্যবহার করেও আপনি আপনার বাসায় মশার উপদ্রব কমাতে পারবেন। মশা সাধারণত যেকোনো ধরনের সুগন্ধি পছন্দ করে না। তাই আপনি ঘুমানোর পূর্বে যে কোন ধরনের সুগন্ধি ব্যবহার করেন তাহলে মশার কামড় থেকে বেঁচে যাবেন।
  • বৈদ্যুতিক বাতি শুধুমাত্র আমাদের আলো দেয় তা কিন্তু নয়। বৈদ্যুতিক বাতি মশার হাত থেকে রক্ষা পেতেও অনেক বেশি সাহায্য করে। হলুদ আলো মশা একেবারেই সহ্য করতে পারে না। তাই আপনি যদি চান আপনার বাসায় মশার উপদ্রব কমে যাক তাহলে ঘরে হলুদ রঙের বৈদ্যুতিক বাতি ব্যবহার করুন।
  • কর্পূর মশা তাড়াতে অনেক বেশি সাহায্য করে। কর্পূর এমন একটি উপাদান যেটির গন্ধ মশাদের যম বলা যেতে পারে। তাই যদি আপনি কর্পূর কিনে এনে সেটি আপনার ঘরের যে কোন এক কোনায় রেখে দেন তাহলে দেখবেন আপনার ঘরে মশার উপদ্রব কমে গেছে।
  • তেজপাতা দিয়েও আপনি আপনার বাসায় মশার উপদ্রব খুব সহজেই কমাতে পারবেন। একটি তেজ পাতায় যদি নিমের তেল লাগিয়ে সেই তেজপাতা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে তার ধোয়া আপনার বাসায় দেন তাহলে তার গন্ধে মশা পালিয়ে যাবে।
  • মশা তাড়ানোর আরেকটি উপাদান হিসেবে আপনি ব্যবহার করতে পারেন রসুন। রসুন ভালোভাবে ক্ষেত্রে নিয়ে তার রস দিয়ে আপনার পুরো ঘরে স্প্রে করলে মশার উপদ্রব থেকে মুক্তি পাবেন।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, আশা করছি আমাদের লেখা মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি মশা সম্পর্কে ও মশার উপকারিতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন। এছাড়াও জানতে পেরেছেন মশা ও মশা বাহিত রোগ কি কি এবং তার লক্ষণ সমূহ কি। যদি আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে মশাবাহিত কোন রোগে আক্রান্ত হলে তার লক্ষণ দেখে বুঝতে পারবেন এবং সতর্কতা অবলম্বন করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিমসসেফ আইটিির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url