মেডিকেল আনফিট হলে করণীয় - ২০২৪
আপনি কি বিদেশ যাওয়ার আগে মেডিকেল করা নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত আছেন? মেডিকেলে যদি আনফিট হন সেই ভয় পাচ্ছেন। যদি এমনটা হয় তাহলে আমাদের লেখা মেডিকেল আনফিট হলে করণীয় আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি মেডিকেল করার আগে কি খাওয়া উচিত এবং দেশের বাহিরে যেতে কি কি প্রয়োজন পড়তে পারে ইত্যাদি।
তাই আপনিও যদি এই বিষয় নিয়ে চিন্তিত থাকেন তাহলে আমাদের লেখা আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আমরা এমন কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাজিয়েছি যা পড়ে আপনি অনেক বেশি উপকৃত হবেন।
মেডিকেল টেস্ট খরচ
কোন ব্যক্তি যখন নিজের দেশ ছেড়ে অন্য দেশে মানে বিদেশে যেতে চাই তখন অবশ্যই তার পূর্বে তাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হয়। যেমন ভিসা, পাসপোর্ট ইত্যাদি। এ সকল প্রয়োজনীয় কাজের পাশাপাশি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে মেডিকেল করা। বিদেশ যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই মেডিকেল করতে হয়।
কারণ মেডিকেল করার পর যদি কোনরকম সমস্যা দেখা দেয় তাহলে বাইরের দেশে যাওয়াতে সৃষ্টি হয় বাধা। আর এই মেডিকেল করার পূর্বে সাধারণ মানুষের মনে সৃষ্টি হয় বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন। যেমন মেডিকেল টেস্ট খরচ কত অথবা মেডিকেল করার পূর্বে কি কি খেতে হবে কিংবা মেডিকেলে আনফিট হলে করণীয় গুলো কি কি। অনেকেই রয়েছেন যারা মেডিকেল টেস্ট খরচ কত এই বিষয়ে নিশ্চিত নয়।
আবার অনেকেই মেডিকেল টেস্ট করতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয় সেই সম্পর্কেও জানেন না। আপনি যদি মেডিকেল টেস্ট করাতে যান তাহলে প্রথমে আপনাকে কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবে। সেই সকল কাগজপত্র জমা দেওয়ার পর মেডিকেল টেস্ট করানো হয়। কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয় সেই সম্পর্কে আলোচনা করলাম।
- পাসপোর্ট সাইজের ৪ কপি ছবি
- পাসপোর্ট এর দুই কপি ফটোকপি
- এনআইডি কার্ডের ফটোকপি
- নিবন্ধন আইডির ফটোকপি
অবশ্যই মেডিকেল করতে যাওয়ার পূর্বে এই সকল কাগজপত্র নিয়ে যেতে হবে। তা না হলে একজন বিদেশগামী ব্যক্তির মেডিকেল টেস্ট করানো হয় না। অনেক ক্ষেত্রে পাসপোর্ট এর মূল কপি ও প্রয়োজন পরে। আপনি যদি সাথে করে মূল কপি নিয়ে যান তাহলে কম ভোগান্তির মুখে পড়তে হবে।
খরচ কত পড়বেঃ আপনি যদি বিদেশে যাওয়ার জন্য মেডিকেল করতে যান তাহলে খরচ হতে পারে সর্বনিম্ন ২১০০ থেকে শুরু করে ১০৫০০ টাকা পর্যন্ত। মেডিকেল টেস্ট করতে একেবারে ঠিক কত টাকা খরচ হবে সেই কথা বলা সম্ভব নয়। আপনার টেস্ট এর উপর ভিত্তি করে টাকার পরিমান কম বেশি হতে পারে। কিন্তু যত টাকা উল্লেখ করা হয়েছে মেডিকেল টেস্ট এর খরচ এর মধ্যেই হয়ে যাবে।
মেডিকেল রিপোর্ট চেক
আপনি যদি মেডিকেল রিপোর্ট চেক নিয়ে চিন্তিত হয়ে থাকেন তাহলে এটি নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার কিছু নেই। কারণ এখন খুব সহজেই অনলাইনে আপনার পাসপোর্ট নাম্বার দেওয়ার পর আপনি আপনার রিপোর্ট চেক করতে পারবেন।
মেডিকেল আনফিট হয় কেন
বিদেশ যাওয়ার পূর্বে যে ব্যক্তি বিদেশ যাবে সেই ব্যক্তির মেডিকেল টেস্ট করাতে হয়। কারণ বিদেশ যাওয়ার পূর্বে যে ব্যাক্তি বিদেশ যাবে তার শরীরে কোনরকম বড় ধরনের রোগ আছে কিনা সেটি জানার জন্য মেডিকেল টেস্ট করানো হয়ে থাকে। মেডিকেল টেস্ট করার পর অনেকেই মেডিকেল আনফিট হয়।
আর যদি কোন ব্যক্তি মেডিকেল টেস্ট করার পর মেডিকেলে আনফিট হয় তাহলে সেই ব্যক্তির বিদেশ যাওয়া সম্ভব নয়। তাই অবশ্যই বিদেশ যাওয়ার পূর্বে মেডিকেল টেস্টে সেই ব্যক্তিকে ফিট থাকতেই হবে। তাহলেই সেই ব্যক্তি বিদেশ যেতে পারবেন। কিছু কিছু রোগ রয়েছেন যেই রোগ যদি ব্যক্তির শরীরে থাকে তাহলে তাকে আনফিট বলে ধরা হয়ে থাকে। যে সকল রোগ থাকলে বিদেশ যাওয়ার জন্য আনফিট বলা হয় তা হলঃ
- শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে
- চর্ম রোগের পরিমাণ খুব বেশি থাকলে
- জন্ডিস থাকলে
- এইচআইভি পজিটিভ হলে
- যক্ষার সমস্যা থাকলে
- হৃদরোগের সমস্যা থাকলে
- হেপাটাইসিস এ,বি পজিটিভ হলে
- মহিলার ক্ষেত্রে তিনি যদি গর্ভবতী হন তাহলে
কোন ব্যক্তির মাঝে যদি উপরের উল্লেখিত রোগ গুলোর মধ্যে কোন একটি রোগ পজিটিভ হয় তাহলে সেই ব্যক্তিকে বিদেশ যাওয়ার জন্য আনফিট ধরা হয়ে থাকে। অবশ্যই তাকে বিদেশ যেতে হলে সেই রোগ ভালো করতে হবে। যদি রোগ ভালো না হয় তাহলে সেই ব্যক্তির বিদেশ যাওয়া কষ্টসাধ্য।
মেডিকেল আনফিট হলে করণীয়
যেকোনো ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় মেডিকেলে আনফিট হওয়া। কোন ব্যক্তি যদি মেডিকেলে আনফিট হয় তাহলে সেই ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা সৃষ্টি হয়। তাই যে ব্যক্তি বিদেশ যাই সেই ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার পূর্বে মেডিকেল টেস্ট করানো হয়ে থাকে।
এ ধরনের টেস্ট করার পর অনেকেই মেডিকেল টেস্টে ফিট হন আবার অনেকেই মেডিকেল টেস্টে আনফিট হয়ে থাকেন। মেডিকেল টেস্টে আনফিট হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকে। ইতিমধ্যেই আপনাদের সামনে আলোচনা করা হয়েছে কি কি কারনে মেডিকেলে আনফিট হয়। কোন ব্যক্তি যদি আনফিট হয় তাহলে তার করণীয় কি এখন আপনাদের সামনে তুলে ধরব।
করণীয়ঃ কোন ব্যক্তি মেডিকেলে আনফিট হওয়ার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায় শরীরে কোন রোগের উপস্থিত। কিছু কিছু রোগ রয়েছে সেই সকল রোগে আক্রান্ত থাকলে অবশ্যই আপনাকে আনফিট ঘোষণা করা হবে। তাই টেস্ট করার পর যেই রোগের কারণে আনফিট বলা হয়ে থাকে সেই রোগ ভালো করার চেষ্টা করতে হবে।
এটা নিয়ে চিন্তিত না হয়ে আপনি এই রোগ ভালো করে আবার পুনরায় তিন থেকে ছয় মাস পর মেডিকেল টেস্ট করাতে পারেন। আবার কখনো কখনো দেখা যায় শরীরে কোনরকম সমস্যা না থাকার পরেও আনফিট ঘোষণা করা হয়ে থাকে। আপনার সাথে যদি এরকম হয়ে থাকে তাহলে আপনি যেই স্থানে টেস্ট করাবেন সেই স্থানে কিছু টাকা দিতে পারেন। দেখবেন আবার তারাই আপনার আনফিট রিপোর্ট ঠিক করে আপনাকে মেডিকেল টেস্টে ফিট করে দেবে।
বিদেশ যেতে কি কি মেডিকেল করাতে হয়
আমরা সকলেই জানি বিদেশ যাওয়ার পূর্বে কিছু পূর্ব প্রস্তুতি করার প্রয়োজন হয়। তার মধ্যে অনেক ধরনের কাজ থাকে। পূর্ব প্রস্তুতির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে মেডিকেল টেস্ট। যেই টেস্টে আপনি যদি আনফিট হন আপনার বিদেশ যাওয়া সম্ভব নয়।
আর সেই মেডিকেল টেস্টে আপনার শরীরের বিভিন্ন রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন রকম টেস্ট করার পর যদি আপনার শরীরে এমন রোগ ধরা পড়ে যা আপনার বিদেশ যাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে তাহলে আপনাকে ঘোষণা করা হবে আপনি আনফিট।
আমরা সকলেই জানি বিদেশ যাওয়ার পূর্বে কিছু টেস্ট করতে হয় কিন্তু অনেকেই জানিনা আসলেই কোন কোন টেস্ট করানো হয়ে থাকে। আপনিও যদি এই না জানার মধ্যে হন তাহলে জেনে নিন বিদেশ যেতে কি কি মেডিকেল করাতে হয়।
- মলমূত্র পরীক্ষা
- হেপাটাইসিস পরীক্ষা
- বিভিন্ন রকম শারীরিক পরীক্ষা
- এইচআইভি পরীক্ষা
- এইচএসবিএসজি পরীক্ষা
- ভিডিআরএল পরীক্ষা
- এক্স-রে পরীক্ষা
- ম্যালেরিয়া পরীক্ষা
- লেপ্রোসি পরীক্ষা
- টিউবারকিউলোসিস পরীক্ষা
- মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রেগনেন্সি পরীক্ষা
বিদেশ যাওয়ার পূর্বে একজন ব্যক্তির উপরে উল্লেখিত টেস্ট গুলো করানো হয়ে থাকে। যদি টেস্টগুলো করার পর কোনরকম সমস্যা না হয় তাহলে সে ব্যক্তিকে মেডিকেলে ফিট ঘোষণা করা হবে। তাই আপনি টেস্ট করতে যাওয়ার পূর্বে নিজেকে প্রস্তুত করে নিবেন।
মেডিকেল রিপোর্ট এর মেয়াদ কতদিন থাকে
আপনি যদি বিদেশ যাওয়ার পূর্বে মেডিকেল টেস্ট করান এবং মনে করেন এই টেস্ট এর রিপোর্ট অনেকদিন পর্যন্ত বৈধ থাকবে তাহলে এটি আপনার ভুল ধারণা। মেডিকেল টেস্ট করার পর সেই রিপোর্ট একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বৈধ থাকে সেই নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলে সেই রিপোর্ট কোন কাজে আসে না।
তাই অবশ্যই রিপোর্ট সময়ের মধ্যেই জমা দিতে হবে। সময়ের পরে যদি জমা দেন তাহলে সেটিকে বৈধ ধরা হবে না। এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে মেডিকেল রিপোর্ট এর মেয়াদ কতদিন থাকে। আপনার মনেও যদি এ প্রশ্ন থাকে তাহলে আমি বলব মেডিকেল করার পর সেই মেডিকেলের রিপোর্ট তিন মাস পর্যন্ত থাকে।
তাই অবশ্যই আপনাকে তিন মাসের মধ্যেই মেডিকেল রিপোর্ট জমা দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে হবে। তিন মাস পার হয়ে গেলে সেই রিপোর্ট আর বৈধ ধরা হবে না। আর আপনার রিপোর্ট বাতিল করে দেওয়া হবে।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক, নিশ্চয়ই আপনি আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন মেডিকেলে আনফিট কি কারনে হয় এবং মেডিকেল আনফিট হলে করণীয় গুলো কি কি। আশা করছি, আপনি আর্টিকেলটি পড়ে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যটি খুঁজে পেয়েছেন। আপনাদের মনে যদি বিদেশ যাওয়া নিয়ে আরো কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদেরকে কমেন্ট করার মাধ্যমে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। আমরা আপনাদের সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করব।
ড্রিমসসেফ আইটিির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url